খেলাধুলা

সাফজয়ী ফুটবলার সুমাইয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি!

স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশের নারী ফুটবলে বর্তমানে চলছে তীব্র অস্থিরতা। ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে নারী ফুটবল দলের ১৮ জন খেলোয়াড় বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বাটলার কোচ থাকলে তারা অনুশীলনে ফিরবেন না, এমনকি জাতীয় দলের হয়ে আর খেলবেন না। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে সাফজয়ী ফুটবলার মাতসুশিমা সুমাইয়ার জীবনে। তিনি অভিযোগ করেছেন, চিঠি লেখার দায়ে তাকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নারী ফুটবল দলের সিনিয়র সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই কোচ পিটার বাটলারের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন। তারা মনে করেন, তার অধীনে অনুশীলন ও খেলার পরিবেশ অনুকূল নয়। সম্প্রতি তারা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আওয়ালের কাছে ইংরেজিতে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি জমা দেন, যেখানে তাদের অসন্তোষের বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়।বাফুফের বিশেষ কমিটি যখন জানতে চায়, এই চিঠি কে লিখেছেন, তখন বিদ্রোহী খেলোয়াড়রা সুমাইয়ার নাম বলেন। সুমাইয়াও স্বীকার করেন যে, সতীর্থদের হয়ে চিঠিটি তিনি লিখেছেন। কিন্তু চিঠি লেখার পর থেকেই তিনি এক অবর্ণনীয় মানসিক চাপে পড়ে গেছেন। সুমাইয়া তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লেখেন, “গত কয়েকদিন ধরে আমি অসংখ্যবার ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি পেয়েছি। যেসব শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, তা আমাকে এমনভাবে ভেঙে দিয়েছে, যা আমি কল্পনাও করিনি।” তিনি আরও বলেন, “ফুটবল খেলার জন্য আমি আমার মা-বাবার সঙ্গে লড়াই করেছি, শুধু এই বিশ^াসে যে আমার দেশ আমার পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। সত্যিকার অর্থে কেউই একজন ক্রীড়াবিদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করে না।” সুমাইয়ার বিরুদ্ধে এমন প্রতিক্রিয়া কেন? মূলত, নারী দলের অধিকাংশ ফুটবলার কোচ বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। তারা মনে করেন, বাটলারের কোচিং স্টাইল এবং তার ব্যবহারে তারা অস্বস্তিতে ভুগছেন। কিন্তু বাফুফে এখনো বিষয়টি সমাধানের জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং, বিশেষ কমিটি বিদ্রোহী খেলোয়াড়দের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফুটবলারদের এই বিদ্রোহের মূল উদ্দেশ্য দলকে একটি নিরাপদ এবং সহযোগিতামূলক পরিবেশে ফিরিয়ে আনা। তবে সুমাইয়ার প্রতি করা হুমকি এবং মানসিক চাপে তাকে ফেলে দেওয়া পুরো বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই হুমকির ঘটনায় দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ক্রীড়া বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রীড়াবিদদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাদের মতামতের মূল্য দেওয়া জরুরি। বাফুফেকে দ্রুত এই ইস্যুর সমাধান করতে হবে এবং সুমাইয়াকে সুরক্ষা দিতে হবে।ফুটবলারদের বিদ্রোহ ও সুমাইয়ার প্রতি হুমকির ঘটনা প্রমাণ করে, দেশের নারী ফুটবলে এখন বড় পরিবর্তনের প্রয়োজন। এই সংকট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে, বাংলাদেশের নারী ফুটবলে আরও বড় ধাক্কা আসতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button