সম্পাদকীয়

সড়কে ডাকাতি প্রতিনিয়ত বাড়ছে, নির্মূলে পদক্ষেপ নিন

সাধারণত বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ রাতে সড়কে যাতায়াত করে। অনেকে নিজের ব্যক্তিগত দায়িত্ব পালন করতে বের হন। আবার অনেকে আছেন বিপদ-আপদে রাতে সড়কে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু বিপদে পড়ে রাস্তায় যাতায়াত করা মানুষদের যদি বাড়তি আরেকটি বিপদে পড়তে হয় তখন বিষয়টি কেমন দাঁড়ায়? নিশ্চয় এটি একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। বলছি সড়কে ডাকাতির ঘটনার কথা। প্রতিদিনে পত্রপত্রিকায় ডাকাতির ঘটনা অর-রোহর হয়ে উঠেছে। পত্রিকা থেকে জানা যায়, সন্ধ্যার পরপরই ডাকাত আতঙ্ক শুরু হয় গাজীপুরের কালিয়াকৈরের আঞ্চলিক সড়কগুলোতে। ডাকাতদলের সদস্যরা নির্জন স্থানে সড়কের ওপর গাছ ফেলে যানবাহন আটকে যাত্রীদের কাছ থেকে এবং পথচারীদের মারধর করে হাতিয়ে নিচ্ছে নগদ টাকাসহ বিভিন্ন মালপত্র। অভিযোগ উঠেছে গত ১৩ মে কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কের পাইকপাড়া নামক এলাকায় সড়কের ওপর গাছ ফেলে প্রায় অর্ধশত যানবাহনে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। অথচ ঘটনাস্থলের অদূরেই কালিয়াকৈর থানার টহল পুলিশ। এর কয়েক দিন পর ১৭ মে বাঁশতলী-জামালপুর সড়কের হাটুরিয়াচালা এলাকায় ডাকাতদলের সদস্যরা একই কায়দায় ডাকাতি করে। লুটে নেয় স্বর্ণালংকারসহ সাত লাখ থেকে আট লাখ টাকার মালপত্র। এর আগে গত ১০ জানুয়ারি মাঝুখান-মাটিকাটা সড়কের আমতলা ব্রিজের কাছে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় একজন সংবাদ কর্মী ওই সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদলের সদস্যরা তাঁর মোটরসাইকেল ও আট হাজার টাকা লুটে নিয়ে তাঁকে হাত-পা বেঁধে সড়কের পাশে ফেলে রাখে। এর কয়েক মাস আগে মৌচাক-ফুলবাড়িয়া সড়কের মসজিদ মার্কেট এবং সোনাতলা এলাকায় ডাকাতি হয়। ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে একজন যুবক নিহতও হয়েছে। শুধু আঞ্চলিক সড়কেই নয়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা, খাড়াজোড়া ফ্লাইওভার এলাকায়ও ছিনতাইকারীরা পথচারীদের কাছ থেকে ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছে স্বর্ণালংকারসহ টাকা-পয়সা। অধিকাংশ ভুক্তভোগীর অভিযোগ রয়েছে সড়কে গাছ পেলে গাড়ি থামিয়ে বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখিয়ে তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয় ডাকাতের দল। এছাড়াও হাত-পা বেঁধে সড়কের পাশে রেখে দেওয়া হয় অনেককে। সড়কগুলোতে আইন-শৃঙ্খলার এমন অবনতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। তবে সড়কে একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ ডাকাতদলের কোনো সদস্যকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সাধারণ মানুষদের এমন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে যথার্থ ব্যবস্থা নেওয়াটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সাধারণ ভুক্তভোগীরা এমন ঘটনায় সম্মুখীন হওয়াতে তারা বিভিন্ন ভাবে হুমকির মুখে পড়ে যায়। এমন অনাকাক্সিক্ষত দুর্ভোগে আর কেউ যেন না পড়ে সেদিকে লক্ষ রেখে সরকারকে প্রশাসনিকভাবে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। সড়কে ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশের টহল ব্যবস্থা বাড়ানো দরকার। এছাড়াও পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় লোকবলের পাহারাদার নজরদারি করা প্রয়োজন।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button