রেলের সময়সূচিতে শৃঙ্খলা ফিরে আসুক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বড় কাজ এখন রেলের সময়সূচিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন বেশ কিছু কাজ অপরিকল্পিতভাবে শুরু করা হয়েছিল। যার কারনে প্রচুর অর্থও ব্যয় করা হয়েছে। নিন্তু সে তুলনায় সাধারণ মানুষ কোন সুফল ভোগ করতে পারেনি। তার প্রধান কারন হলো রেলপথের সংস্কারসহ আরও অনেক নানা বিষয়। রেলপথের সংস্কার এবং ট্রেন চলাচলের গতি হালনাগাদ করার জন্য রেলওয়ের প্রকৌশল দপ্তরকে গত ২৮ আগস্ট চিঠি দিয়েছে প্রধান পরিচালন কর্মকর্তার (সিওপিএস) কার্যালয়। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু ও সময়ানুবর্তিতা অনুযায়ী ট্রেন পরিচালনার জন্য একটি মানসম্মত সময়সূচি প্রণয়ন করা অপরিহার্য। এ জন্য ওয়ার্কিং টাইম টেবিল ৫৪ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সময়সূচি নির্ধারণে পূর্বাঞ্চলের সব সেকশনের স্থায়ী গতি অর্থাৎ রেলপথের (ট্র্যাক) গতি হালনাগাদ করা অত্যন্ত জরুরি। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ট্রেনগুলোর গন্তব্যে পৌঁছাতেও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ থেকে ৩৫ মিনিট পর্যন্ত বেশি লাগছে। এতে যাত্রীদের যেমন বাড়তি সময় লাগছে, তেমনি ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই ট্রেন বিলম্ব হলে যাত্রীদের ভোগান্তি নিয়ে খুব একটা গুরুত্ব দিতে দেখা যায় না রেল কর্তৃপক্ষকে। রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, টঙ্গী-ময়মনসিংহ ও ভৈরববাজার-ময়মনসিংহ সেকশনের বেশ কিছু স্থানে অস্থায়ী গতি নিয়ন্ত্রণাদেশের কারণে তিস্তা, অগ্নিবীণা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, মোহনগঞ্জ, বিজয় এক্সপ্রেসের মতো আন্তঃনগর ট্রেনসহ প্রায় ২০টি ট্রেনের সূচি মেনে চলাচল করা সম্ভব হয় না। টাইম টেবিলে নির্ধারিত স্থায়ী নিয়ন্ত্রণাদেশ লিপিবদ্ধ থাকলেও ছয় মাসের বেশি সময় ধরে অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণাদেশের কারণে ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কয়েক ঘণ্টা বিলম্বে গন্তব্যে যাচ্ছে। আবার ফিরতি পথে সময়ক্ষেপণ হওয়ায় প্রারম্ভিক স্টেশন থেকেও অনেকগুলো ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হচ্ছে। বিলম্বের কারণে যাত্রীদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হওয়ায় এসব ট্রেনে যাত্রী কমে যাওয়ার পাশাপাশি রেলের রাজস্ব আয়েও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সময় মেনে ট্রেন চলাচলসহ সেবার সার্বিক মান বাড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রেলের সূচি বিপর্যয় কমিয়ে আনা, টিকিট কালোবাজারি নিয়ন্ত্রণ, রেলের ব্যয় সংকোচন করে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়সহ রেলকে লাভজনক পর্যায়ে নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। এখন নির্দেশনাগুলো কতটা বাস্তবায়ন হয়, সেটিই দেখার অপেক্ষা। তবে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে যে নতুন এই নির্দেশনাগুলো অবশ্যই বাস্তবায়ন হবে এবং স্বস্তি ফিরে পাবে যাত্রীরা। ট্রেনের সময়সূচিকে বর্তমানের উপযোগী করে প্রণয়নে গুরুত্ব দিতে হবে।