সড়ক দুর্ঘটনা রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নিন

প্রাত্যাহিক জীবন চলার পথে আমরা অনেক রকমের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে থাকি। এমন দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা অন্যতম। দুর্ঘটনা এমনি একটি ঘটনা যা ঘটে অনাকাক্সিক্ষত এবং অপ্রত্যাশিত। এমন অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা কেড়ে নিচ্ছে মানুষের সর্বস্ব। কেউ মূল্যবান জীবন হারায়, আবার কেউ আহত হন সারা জীবনের জন্য। এমন মর্মান্তিক ঘটনাগুলোর জন্য আসলে কেউই প্রস্তুত থাকে না। হঠাৎ জীবনে নেমে আসে কালো ছায়া। যা সারা জীবনের কান্না হয়ে দাঁড়ায়। এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনাগুলোর অধিকাংশই সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটে থাকে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো পত্রপত্রিকায় সড়ক দুর্ঘটনার সমাধান চেয়ে বিগত কয়েক বছর থেকে প্রতিবেদন করে থাকলেও কোনো কাক্সিক্ষত ফলাফল পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকার খবরাখবর থেকে জানা যায়, গত রোববার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত সাত জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। মোংলা-মাওয়া মহাসড়কের কাটাখালী এলাকায় গত সোমবার সকালে পিকআপ ও ইজিবাইক সংঘর্ষে ইজিবাইকের চার যাত্রী নিহত হয়েছেন। টাঙ্গাইল মির্জাপুরে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের শুভুল্যা ও গোড়াই ইউনিয়নের দেওহাটা এলাকায় গত সোমবার এ দুর্ঘটনা ঘটে। কুমিল্লা ইপিজেডের সামনে গত রোববার রাতে কাভার্ড ভ্যান চাপায় নিহত হন একজন। নড়াইল কালিয়ায় আরবি পড়ে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে নিহত হন কলেজ ছাত্র। এছাড়াও ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে এনজিও কর্মী নিহত হয়েছেন। শ্রীপুর গাজীপুরের শ্রীপুরে গত সোমবার গাড়িচাপায় এক গার্মেন্ট কর্মী নিহত হয়েছেন এবং সিলেট কানাইঘাটে গত সোমবার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন একজন যুবক। এভাবে সারাদেশে প্রতিনিয়ত শত শত মানুষ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। প্রতিদিন আমরা পত্রিকার পাতায় এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনাগুলোর খবর পেয়ে থাকি অথচ এই বিষয়ে কোনো কাক্সিক্ষত ফলাফল আমরা পাচ্ছি না। প্রতিবছর এভাবে সড়কে ঝরছে অকাল মৃত্যু। সড়কে প্রতিনিয়ত এভাবে প্রাণ ঝরতে থাকলে একসময় দেশ মেধা শূণ্যতায়ও ভুগবে। দেশের মানুষ সড়কে এমন অপ্রত্যাশিত মৃত্যু থেকে পরিত্রাণ চায়। সড়কে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সরকারের উদ্যোগের বিকল্প নেই। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে এখনি মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহণ; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো ইত্যাদি বিষয়গুলোর উপর নজরদারি করে সঠিক সমাধান করতে হবে।