গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়া হোক

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের গ্রাহক পর্যায়ে স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের কথা বলে আগের সরকার অনেক স্মার্ট জালিয়াতি করে গেছে। এর কিছু এখন প্রকাশ পাচ্ছে। এমনই একটি জালিয়াতি হয়েছে স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপন নিয়ে। টেন্ডার জালিয়াতির মাধ্যমে বাজারদরের চেয়ে অনেক বেশি দামে কেনা হয়েছে চার লাখ ৯০ হাজার মিটার। অভিযোগ রয়েছে, এই জালিয়াতিতে সাবেক তিন সংসদ সদস্যের পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও তাঁর এক বন্ধু এবং সাবেক বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। স্মার্ট মিটার স্থাপন প্রকল্পে জালিয়াতি করায় বর্তমান সরকারের পাশাপাশি গ্রাহকদের ওপরও বাড়তি অর্থের চাপ পড়েছে। কারণ প্রতিটি মিটার ক্রয়ের অর্থ বাবদ গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে কেটে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মিটার ক্রয়ে জালিয়াতির কারণে বাড়তি অর্থ গুনতে হয়েছে গ্রাহকদের। যদি সঠিক দামে এসব মিটার কেনা হতো তাহলে প্রতি মাসে মিটার চার্জ বাবদ গ্রাহকদের অনেক কম অর্থ পরিশোধ করতে হতো। জ¦ালানি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, চার লাখ ৯০ হাজার মিটারের সঙ্গে এক হাজার ৬০০টি ডিসিইউ, ছয় হাজার ৪০০টি রিপিটারের মূল্য বিবেচনায় নিলে প্রতিটি মিটারের জন্য সরকারের ব্যয় দাঁড়াবে ২৫ হাজার ২০৬ টাকা। সব মিলিয়ে স্মার্ট মিটার স্থাপনের একটি লটে অন্তত ৪০০ কোটি টাকার জালিয়াতি করা হয়েছে। স্মার্ট প্রি-পেইড মিটারের আন্তর্জাতিক বাজারদর হিসাব করে দেখা গেছে, এই প্রকল্পের টেন্ডার জালিয়াতি করে পুকুরচুরি করা হয়েছে। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দরপত্রে চাওয়া সিঙ্গেল ফেজ ইলেকট্রিক মিটারের দাম ছয় ডলার থেকে শুরু করে ভালো মানের মিটারের দাম ৩৫ ডলার। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে এই মিটারের দাম সর্বনি¤œ ৭০০ থেকে শুরু করে চার হাজার ২০০ টাকা (এক ডলার সমান ১২০ টাকা)। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড যদি ভালো মানের মিটারের দরপত্রও আহ্বান করে তাহলে প্রথম লটে প্রতিটি মিটারে প্রায় আট হাজার ৫০০ টাকা বেশি দাম ধরে কাজ দিয়েছে। আর দ্বিতীয় লটের কাজেও প্রায় দুই হাজার ২০০ টাকা বেশি দাম কাজ দেওয়া হয়েছে। এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। সেইসাথে গ্রাহকদের অর্থ ফিরিয়ে দিতে হবে।