সম্পাদকীয়

োঅবৈধ পাখি বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বিরল প্রজাতির পাখির বেআইনি বাণিজ্যের নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। মোটা অঙ্কের মুনাফার লোভে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে অসহায় পাখির জীবন। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে প্রায়ই বাংলাদেশে ঢোকা শত শত বিদেশি পাখি জব্দ করা হলেও অনেক ঘটনায় থেকে যায় আড়ালে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশুপাখি পোষার প্রবণতা বেড়েছে। অনেকে মনে করেন, নগরকেন্দ্রিক নানা বাস্তবতা ও যান্ত্রিক জীবনযাপনের কারণে এমনটি ঘটছে। যার কারণে আমরা দেখি, গত তিন-চার বছরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশি-বিদেশি পাখি কেনাবেচা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। অবৈধভাবে বিমানবন্দর দিয়ে আসছে নানা ধরনের বিদেশি পাখি, যা আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বলিভিয়ার ম্যাকাও, দক্ষিণ আফ্রিকার সারস, নিউজিল্যান্ডের কাকাতুয়া, আর্জেন্টিনার ট্যুকান, ব্রাজিলের ইমু-কী নেই সেখানে। বিশেষ কায়দায় ছোট বাক্সে এসব পাখি নিয়ে আসা হয়। প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ম্যাকাও শুধু অ্যামাজনে থাকে, আর কয়েকশই মাত্র টিকে আছে। ছোট কাঠের বাক্সে ঠাসাঠাসি করে আরও নানা পাখির মধ্যে মিশিয়ে এদের আনা হয়। এসব চালান থেকে নিষিদ্ধ পাখি চিহ্নিত করা কষ্টসাধ্য। একেবারে বুনো পরিবেশ থেকে ধরে আনা পাখিও বাংলাদেশের পোষা পাখির বাজারে ঢুকছে। বাংলাদেশে বন বিভাগের ২০২২ সালের অভিযানে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়া মালি থেকে আনা ২৭টি হুতুম প্যাঁচা আর ঈগল সে রকমই একটি উদাহরণ। অবৈধ পাখি-বাণিজ্য বিস্তার লাভ করায় বন্য প্রাণী ও উদ্ভিদ-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করা একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে বাংলাদেশের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে গত জুলাই মাসে। বাংলাদেশে পোষা প্রাণীর বাজার ক্রমেই বাড়ছে, এটি বিবেচনা করতে হবে। পাখির পাশাপাশি সাপ, ব্যাঙ, বিচ্ছু, মাকড়সা, কোরাল নানা কিছু বাংলাদেশে ঢোকে। ফেসবুক-ইউটিউবে সেসবের বিক্রি-প্রদর্শনী হামেশাই হয়। দেশের বন্য প্রাণীও বাইরে যাচ্ছে। সাইটিস তথ্যভান্ডার বলছে, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে হাজারের বেশি সবুজ-পাখা ম্যাকাও বাংলাদেশে ঢুকেছে। ব্রাজিল, মেক্সিকো, সাইপ্রাস, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্পেন, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও গায়ানা থেকে এসব এনে বিমানবন্দর ও স্থলবন্দর ব্যবহার করে পাঠানো হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। “লাইসেন্স ছাড়া খামার ও ‘পেটশপ’ স্থাপন ও পরিচালনা করা বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী দ-নীয় অপরাধ। কেউ এ বিধান লঙ্ঘন করলে যে শাস্তির বিধান রয়েছে তার বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকার ও সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button