বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিন
রোজার আগেই কারসাজি
রমজান মাস আসার আগেই বাজারে নানা রকম কারসাজি শুরু হয়ে গেছে। আলু, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি খাদ্যপণ্যের দামই বাড়তি। তার ওপর বাড়তে শুরু করেছে সয়াবিন তেলের দাম। এর আগে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম লিটারে ২০ টাকার মতো বেড়ে গেছে। এখন বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, অনেক কোম্পানি বাজারে বোতলজাত তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। জানা যায়, বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ভোজ্য তেলের ওপর বর্তমানে প্রযোজ্য আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১০ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে ১৬ অক্টোবর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে আরোপনীয় ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়। ফলে বর্তমানে আমদানি পর্যায়ে কেবল ৫ শতাংশ ভ্যাট চালু রয়েছে। তার পরও সয়াবিন তেলের এভাবে দাম বাড়া এবং এভাবে বোতলজাত তেলের সরবরাহ কমে যাওয়া মোটেও কাম্য নয়। কোথায় সংকট হচ্ছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে খোঁজ নিয়ে সংকট নিরসনে উদ্যোগ নিতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এভাবে বেড়ে গেলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। স্থির ও নি¤œ আয়ের মানুষের পক্ষে পরিবারের সদস্যদের পুষ্টির চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। ক্রমান্বয়ে সরকারের প্রতি তাদের অসন্তোষ বাড়ে। এরই প্রতিফলন দেখা যায় ভয়েস অব আমেরিকার জরিপে। এতে দেখা যায়, বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের চেয়ে খারাপ পারফরম করছে অথবা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। ৪৪.৭ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন চাল, মাছ, সবজি, ডিম, মাংস ও তেলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে অন্তর্র্বতী সরকার গত আওয়ামী লীগ সরকারের চেয়ে খারাপ পারফরম করেছে। আর ৩০.৮ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন পরিস্থিতি আগে যা ছিল, তা-ই আছে অর্থাৎ আগের সরকারের চেয়ে ভালো কিছু করতে পারছে না। বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ছোট-বড় অসংখ্য চক্র বা সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে, যারা বাজার অস্থির করার যথেষ্ট ক্ষমতা অর্জন করেছে। পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে আসন্ন রমজানে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠবে।