সবজি চাষিদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত জরুরি
বাজারে সবজির যথেষ্ট কদর থাকলেও কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনা। বাজারে সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা যথেষ্ট মূল্যে সবজি বিক্রি করছে কিন্তু চাষিরা তাদের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনা। যার জন্য প্রতিটি কৃষক হতাশায় ভুগছেন। আমরা সবসময়ই কৃষকের পণ্যের ন্যায্যমূল্যের কথা বলে এসেছি। বর্তমানে সবজির মৌসুম চলছে। এবার উৎপাদনও হয়েছে ভালো। তাই বাজারে সবজির দামে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু ভোক্তার স্বস্তিই শেষ কথা নয়। উৎপাদক তথা কৃষক যদি তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পায়, তাহলে তো দেশের একটা বড় শ্রেণি তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। এটাও সত্য যে, কোনো মৌসুমে কৃষক যদি তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পান, তাহলে পরবর্তী মৌসুমে তারা ওই পণ্যটির চাষ করতে নিরুৎসাহিত বোধ করেন। জমিতে অন্য কিছু ফলিয়ে থাকেন। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলু, পেঁয়াজ, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ সব ধরনের সবজির দাম আগের তুলনায় কয়েকগুণ কমেছে। আর এতে সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করলেও লোকসান গুনতে হচ্ছে সবজি চাষিদের। পাইকারি বাজারের সাথে খুচরা বাজারের সমন্বয় না থাকায় বাজারে এ অবস্থা চলছে। বড় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কবলে পরে কৃষকরা বারবার লোকসান দিচ্ছে। পাইকারি বাজারের সাথে খুচরা বাজারের কোনো মিল নেই। তাছাড়া কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ বছর বীজ, সার, কীটনাশকের দাম বাড়তি ছিল তাই কৃষির উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সব ধরনের সবজির বাজার কমে যাওয়ায় কৃষক বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে যারা এ বছর ফুলকপি চাষ করেছেন তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। প্রতি পিছ ফুলকপি চাষে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ টাকা খরচ হয় কিন্তু বাজারে বর্তমানে ফুলকপি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৮ টাকায়। তাছাড়া আলু এবং পেঁয়াজের বীজের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় এ বছর ফলনের খরচও বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পাইকারি পর্যায়ে সবজির দাম কমে যাওয়ায় সবজি চাষিরা হতাশায় ভুগছেন। বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতিটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৮ টাকা করে, নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি, নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, সিম বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি করে, প্রতিটি বাঁধাকপি পাইকারি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ফুলকপি প্রতিটি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, নতুন আলু ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে, পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সিম ৪০ থেকে ৫০ করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সব সবজির ক্ষেত্রে চাষি যেন তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান, তা নিশ্চিত করা হবে। কীভাবে বাজারমূল্য ঠিক রেখে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা যায়, অর্থনীতিবিদসহ দেশের কর্তাব্যক্তিদেরই সেই উপায় বের করতে হবে।