যশোরে মাদকদ্রব্য কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এক নারীকে ধর্ষণ
# ও টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক পিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার #
যশোর ব্যুরো ঃ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের এসআই পরিচয় দিয়ে প্রতারণা ও ধর্ষন করার অভিযোগে ধর্ষক সুমন বসু (৩৬ ) কে গোপালগঞ্জ জেলা থেকে পিবিআই যশোরের একটি চৌসক টিম। এ ঘটনায় যশোরের অভিয়নগর থানায় মামলা হয়েছে। ধর্ষক সুমন বসু গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার ছোট মানিকহার গ্রামের সঞ্জীব বসুর ছেলে। বুধবার ৩জুলাই যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পিবিআই সূত্রে জানাগেছে,যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাসিন্দা কৃষি ডিপ্লোমা পাশ করার এক নারী কোন চাকুরী না পাওয়ায় অনলাইনে কাজ করেন। উক্ত কাজ থেকে তিনি কিছু অর্থ উপার্জন করেন। উক্ত নারীর সাথে সুমন বসুর ফেসবুক এর মাধ্যমে পরিচয় হয়। সুমন বসু নিজেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের এসআই পরিচয় দেয় উক্ত নারীর কাছে। পরিচয়ের সূত্র ধরে সুমন ওই নারীর সাথে মোবাইলে কথা বলতো। তাদের মধ্যে কথাবার্তার এক পর্যায় দু’জনের মধ্যে সখ্যতা ও ভালবাসা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে সুমন মাঝে মধ্যে ওই নারীর পিতার বাড়িতে আসা যাওয়া করতো এবং বিয়ের করবে বলে প্রলোভন দেখাতো। সুমন বসু ওই নারীকে বিভিন্ন সময় যশোরের বিভিন্ন হোটেলে ও নড়াইলের অরুনিমা রিসোার্টে রুম ভাড়া নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পুর্বক ধর্ষন করতো। এরপর থেকে উভয়ের মধ্যে নিয়েমিত যোগাযোগ চলতে থাকে। প্রতারক সুমন বসু বিভিন্ন সময় তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ওই নারীর কাছ থেকে বিকাশ ও নগদ একাউন্ট এর মাধ্যমে ধার হিসেবে এ যাবত ১৪লাখ ৮৯ হাজার ৮৮০ টাকা গ্রহন করেন। সুমনের কথাবার্তা ও আচারণ ওই নারীর কাছে সন্দেহ হলে সুমন বসুর গ্রামের বাড়িতে যেয়ে ওই নারী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সে বিবাহিত ও তার স্ত্রী সন্তান আছে। জানার পর ওই নারী সুমন বসুর কাছে ধান দেওয়া টাকা ফেরত চাইলে সে ফেরত দিতে অস্বীকার করে এবং ওই নারীকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয়। সুমন ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষন এবং তার নিকট হতে উল্লেখিত টাকা ধার হিসেবে নিয়ে বিশ^াসভঙ্গ করে আত্মসাত করেছে। এ ঘটনায় ওই নারী কোন উপায়ূন্তর না পেয়ে যশোর পিবিআই এর পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে পিবিআই এর একটি টিম ঘটনা তদন্তে মাঠে নামেন।
পিবিআই যশোর দপ্তওে কর্মরত এসআই হাবিবুর রহমান তদন্তে নেমে জানতে পারেন সুমন বসু সে নিজেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মেয়ের সাথে সখ্যতা গড়ে তলে। পরবর্তীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা নিয়ে নেয়। পূর্বেও সে একাধীক মেয়ের সাথে প্রতারণা করে। সে ওই নারীর সাথে একইভাবে সখ্যতা গড়ে তোলে এবং বাদীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে আত্মসাত করেন। সে একজন বড় মাপের প্রতারক বলে জানা যায়। উক্ত বিষয়ে অনুসন্ধানকালে আসামী সুমন বসু ঘটনার সহিত জড়িত মর্মে সত্যতা পাওয়া গেলে পিবিআই অ্যাডিশনাল আইজি, বাংলাদেশ পুলিশ এর সঠিক তত্ত্ববধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্ত্বে এসআই হাবিবুর রহমান, এসআই ¯েœহাশিস দাশ সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স সহ যশোর জেলার আভিযানিক দল গত ২ জুলাই মঙ্গলবার সকালে গোপালগঞ্জ সদর থানাধীন মানিকহার গ্রাম হতে সুমন বসুকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে ওই নারী আসামীর বিরুদ্ধে যশোরের অভয়নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে অভয়নগর থানার মামলা নং-১, তারিখঃ ০২/০৭/২০২৪ খ্রিঃ, ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং-২০০৩) এর ৯(১) তৎসহ ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড রুজু হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত সুমন বসু ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করলে ৩ জুলাই বুধবার বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমালী আদালত, যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়।