কেসিসির ৯৮২ কোটি টাকার বাজেট চুপি সারে অনুমোদন ঃ অর্জনের হার ৮৬.৮১%

# বাজেটের আকার ছোট হলেও তা জনবান্ধব-দাবি কেসিসির
#বাজেট নগরবাসীর ওপর চাপিয়ে দেয়া নিয়ে নাগরিকদের ক্ষোভ #
খলিলুর রহমান সুমনঃ খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেট চুপি সারে অনুমোদন হয়েছে। এবার বাজেটের আকার করা হয়েছে ছোট। গত ২৬ সেপ্টেম্বর কেসিসির প্রশাসক বাজেট অনুমোদন দিয়ে তা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে। অর্থ সংস্থাপন কমিটির অনুমোদন ছিল আগেই। সেই অনুমোদিত কপি প্রশাসক অনুমোদন দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়। এবারের প্রস্তাবিত বাজেট ৯৮২ কোটি টাকা। যা গত অর্থ বছরের চেয়ে এবারের বাজেট একশত কোটি টাকা কম ধরা হয়েছে। অনুমোদিত এ বাজেট জনবান্ধব ও উন্নয়নমুখী বাজেট বলে আখ্যায়িত করেছে সংশ্লিষ্টরা। কেসিসি সূত্রে প্রকাশ, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কেসিসির প্রস্তাবিত ৯৮১ কোটি ৯৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকার বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যার রাজস্ব আয়ের তহবিল ধরা হয়েছে ৪৫২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা আর উন্নয়ন তহবিল ধরা হয়েছে ৫২৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয় ১০৮২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ওই বছর আয়ের রাজস্ব তহবিল ধরা হয় ৩৪৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আর উন্নয়ন তহবিল ধরা হয় ৭৩৬ কোটি ৬ লাখ টাকা। ওই বাজেট এবার সংশোধীত আকার ধারায় ৮৪৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। বাজেট বাস্তবায়নের হার ৮৬.৮১%। গত অর্থ বছরে (২০২৩-২৪) বাজেটে অর্জনের হার ছিল ৭৮.১৮%। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বাজেটে অর্জনের হার ছিল ৮১%। এবার বাজেটে অর্জনের হার বিগত বছরের চেয়ে ভাল। এবার বাজেটের আকার ছোট হলেও করের আকার, রেটস-এর আকার, ফিসের আকার, ক্ষতিপূরণের আকার, টেন্ডার ফরম বিক্রির আকার,এ্যাসফল্টপ্লান্ট হতে আয়ের আকার, বাস ও ট্রাক টার্মিনাল থেকে আয়ের আকার, কেসিসি পেট্রোলিয়াম হতে আয়ের আকার বড় ধরা হয়েছে। বাজেটে জাতীয় এডিপিভুক্ত প্রকল্পসমূহের মধ্যে খুলনা সিটি কর্পোরেশন ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫শ’ কোটি টাকা। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ীর লক্ষে এলইডি সড়ক বাতি স্থ্পান প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত প্রকল্প অনুমোদন হলে এবং বরাদ্দ পাওয়া গেলে সংশোধিত বাজেটে যোগ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। আর চলমান প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তার উন্নয়ন ও পূর্নবাসনের জন্য প্রায় ৭৬ কোটি টাকার প্রকল্প। খুলনা শহরের জলাবদ্ধতা দুরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য ১৩৫ কোটি টাকার প্রকল্প। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য ৪৩ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলমান। সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন খুলনার সম্পাদক এড. কুদরত ই খুদা বলেন, কেসিসি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। জনগণের মতামতের ভিত্তিতে তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা উচিত। জনগণের মতামত ছাড়া বাজেটের মত বড় ধরনের সিদ্ধান্ত কেসিসির নেয়া উচিত হয়নি। হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে ট্যাক্সের পরিধি বাড়াতে হবে। অহেতুক জনবল কমিয়ে সেবারমান বাড়াতে হবে। বিগত দিনে বাজেট চূড়ান্ত করার পূর্বে নাগরিকদের সাথে বসে মতামত গ্রহণ করা হতো। যা পরে চূড়ান্ত বাজেটে সংযোজন ও বিয়োজন করা হতো। গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন খুলনার সাঃ সম্পাদক জাবেদ খালিদ জয় বলেন, কেসিসির বাজেট জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়ার বিষয় নয়। জনগণের মতামত গ্রহণ করে তা সমন্বয় করে বাজেট পেশ করা উচিত। কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলাম বলেন, মেয়র, কাউন্সিলর, কমিটি আর পরিষদ কিছুই নেই। যার জন্য নাগরিকদের নিয়ে বসার বিষয়টি মাথায় আসেনি। প্রশাসক দায়িত্ব নেয়ার পর কেসিসিতে বড় ধরনের কোন সভা সেমিনার হয়নি বলে তিনি জানান।