স্থানীয় সংবাদ

যশোরে বিএনপি সমর্থকের বাড়ি লুটপাট ও হত্যার ঘটনায় ১২ বছর পর মামলা

যশোর ব্যুরো ঃ সদরের লেবুতলা ইউনিয়নের বলেশ^পুর গ্রামের গরুর খামারী প্রতিবাদী আবু সিদ্দিক (৩৮)এর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর অগ্নি সংযোগ, লুটপাট ও অপহরন করে হত্যার অভিযোগে ১২ বছর পর আদালতের নির্দেশে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি করেন,যশোর সদর উপজেলার কাঠামারা বিশ^াস পাড়ার মৃত হায়দার বিশ^াসের ছেলে নিহতর ভাই আনোয়ার হোসেন ইদু। মামলায় আসামী করেন, সদর উপজেলার আন্দোলপোতা গ্রগামের মৃত মতিয়ার বিশ^াসের ছেলে লেবুতলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মিলন,সহোদর তারিকুজ্জামান রিপন,একই গ্রামের মৃত মোমিন মোল্লার ছেলে তহিদুল,মৃত সিপাতুল্যা বিশ^াসের ছেলে সাক্কার,সহোদর বাক্কার, মৃত জবেদ আলী সরদারের ছেলে ইমদাদুল,বাঘারপাড়া উপজেলার কঠুরাকান্দি গ্রামের বিষু মোল্যার ছেলে কামরুজ্জামান,সদর উপজেলার তেজরোল গ্রামের মৃতৃ জেতিন ঘোষের ছেলে নব কুমার লব ঘোষ,বাঘারপাড়া উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের দাউদের ছেলে এরশাদ,সদর উপজেলার জগমোহনপুর গ্রামের নজিরের ছেলে বুলু,দলেন নগর গ্রামের সরোয়ারের ছেলে রোকন, আন্দোল পোতা গ্রামের মৃত আরশাদ গাজীর ছেলে রবিউল গাজী, একই গ্রামের আলা সরদারের ছেলে নিছার আলী, আলী উদ্দীন সরদারের ছেলে আলি আজগর,গহের পুর গ্রামের হোসেন মোল্যার ছেলে ময়নুদ্দীন ময়না ও এনায়েতপুর গ্রামের মোকছেদ এর ছেলে খায়রুল।
বাদি মামলায় উল্লেখ করেন,আসামীগন ভূমিদস্যু,অগ্নিসংযোগকারী,হত্যাকারী,পরসম্পদ লোভী,চাঁদাবাজ, অসৎ প্রকৃতির লোক এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী। বাদির ভাই আবু সিদ্দিক যশোর বিএনপি দল সমর্থন করে। সকল আসামীগন আওয়ামীলীগের সমর্থনকার চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হওয়ায় আসামীগনের ভয়ে এলাকার শান্তিপ্রিয় লোকজন কেউ টু শব্দ করতে পারেনা। বাদির ভাই নিজ বাড়িতে গোয়াল ঘরে গরুর খামার করে জীবিকা নির্বাহ করতো। আসামীদের সন্ত্রাসী মূলক কার্যকলাপ করতে নিষেধ করে এলাকায় ভাল কাজ করার পরামর্শ দেওয়ায় আসামীগণ ক্ষিপ্ত হয়ে বাদির ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করে বিগত ২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৩ টা বেজে ৫০ মিনিটে বাদির ভাই আন্দোলপোতা বাজারস্থ আব্বাসের চায়ের দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর আলিমুজ্জামান মিলনের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ ভাবে সকল আসামীগন বাদির ভাইকে হত্যার জন্য মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার বাড়িতে রওয়ানা করে। ওই দিন বিকাল ৪ টার সময় বলেশ^রপুর গ্রামের আবু সিদ্দিকের বাড়ির উঠানে পৌছে সকল আসামীগন আবু সিদ্দিকের নাম ধরে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়ে ডাকাডাকি করে এবং বাদির ভাইকে ঘর হতে বাইরে আসার জন্য চিল্লাপাল্লা করতে থাকে। আসামীগের তান্ডবলিলা দেখে আবু সিদ্দিক ঘর হতে বের হয়ে বাড়ির নিকটে বাগানের মধ্যে আত্মগোপন করে ডাক চিৎকার দিলে বাদিসহ অনেকে এগিয়ে এসে আসামীদের তান্ডবলিলা প্রত্যক্ষ করেন। আবু সিদ্দিককে ঘরে মধ্যে না পেয়ে আলিমুজ্জামান মিলনের হুকুমে সকল আসামী ঘরে ঢুকে লুটপাট শুরু করে। আসামী ইমদাদুল বাদির ভাইয়ের শোকেচ এর মধ্যে থাকা নগদ ৪৫ হাজার টাকা নেয়। আসামী কামরুজ্জামান শোকেচ এর ড্রয়ারে থাকা ৩ ভরি স্বর্ণালংকর লুটকরে। তারিকুজ্জামান রিপনসহ অন্যান্য আসামীগণ বাদির ভাইয়ের গোয়াল ঘর হতে ৫টি গাভী ও ২টি বাছুর নিয়ে যায়। আলিমুজ্জামান মিলনের হুকুমে আসামীরা বাদির ভাইয়ের ঘর ও গোয়াল ঘরে আগুন ধরে পুড়িয়ে দেয়। আসামীরা বাদির ভাইকে বাগানের মধ্যে খোজার সময় দেখতে পেয়ে ধরার চেষ্টাকালে আবু সিদ্দিক তার প্রাণ ভয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য দৌড়ে পালানোর সময় ওই দিন বিকাল পৌনে ৫টায় কাঠামারা চিত্রা নদীর সমসের দালালের ঘাটস্থ আসামী সাত্তার,বাক্কার ও নব কুমার লব ঘোষসহ অনেকে পানি সাতরিয়ে আবু সিদ্দিককে ধরে নদীর পাড়ে এনে তাকে মারপিট করার সময় স্থানীয় ঘটনা দেখে ঠেকানোর চেষ্টা করলে আসামীগণ সেখান থেকে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়।ওই দিন রাত ৮ টার সময় গহেরপুর গ্রামের রহিমা ক্লিনিকের দক্ষিণে রাস্তার পাশের্^ ফেলে যাওয়ার সময় স্থানীয় বাবলু রহমতসহ অনেকে ঘটনা দেখে বাদির বাড়িতে সংবাদ দিলে বাদিসহ স্থানীয় লোকজন নিয়ে রাত সাড়ে ৮ টার সময় আবু সিদ্দিককে আহত অবস্থায় পেয়ে তার কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে উপরোক্ত আসামীদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। আসামী তহিদুল,সাক্কার,বাক্কার, নব কুমার লব ঘোষ,ময়নুদ্দীন ময়না,কামরুজ্জামানগণ অজ্ঞাতস্থানে বাদির ভাইকে নিয়ে ভয়ভীতি প্রর্দশন করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য কোমল পানীয় স্প্রাইটের মধ্যে চেতনা নাশক জাতীয় পর্দাথ পান করানোর পরে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে এবং তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছেি ভেবে তাকে ওই খানে ফেলে রেখে গেছে বলে স্থানীয় লোকজনের সামনে বাদির ভাই প্রকাশ করে। তার অবস্থা ক্রমান্বয়ে খারাপ হওয়ায় তাকে দ্রুত যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হলে উপশহর খাজুরা বাসস্ট্যান্ড মোড়ে পৌছালে আবু সিদ্দিক মারা যায়। আসামীদের চাপের কারনে বাদির ভাইয়ের লাশের সুরোতহাল ও ময়না তদন্ত করা সম্ভব হয়নি। নিহতর লাশ নিজ বাড়িতে নিতে বাদি সাহন না পেয়ে বাদির মামাতো ভাই ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার ফুলবাড়ী গ্রামের কামরুজ্জামান মিলনের বাড়িতে নিয়ে যেয়ে সেখানে দাফন করার জন্য প্রস্তুুতিকালে ১৯ ফেব্রুয়ারী সকার ৭ টার সময় আসামীগণ সেখানে উপস্থিতি হয়ে আবু সিদ্দিকের লাশ ছিনিয়ে নিয়ে বলেশ^রপুর গ্রামের এনে সকাল ১১ টাল পারিবারিক করবস্থানে দাফন করেন। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পরে ঘটনার বিস্তারিত নিয়ে বাদি তার পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা করে বিজ্ঞ আদালতে এসে মামলা করে। আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া বাদির অভিযোগ আমলে নিয়ে কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জকে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ প্রদান করেন।#

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button