স্থানীয় সংবাদ

মণিরামপুরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সহ: শিক্ষক ১৪ বছর সভাপতি

# শৈলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় #
# ৮ নিয়োগে কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ #

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি ঃ আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে যশোরের মণিরামপুরে শৈলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হন পাশর্^বর্তি একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জুনিয়র শিক্ষক ও হরিহরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রিপন কুমার ধর। শুধু তাই নয়, একটানা প্রায় ১৪ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের জোগসাজসে আটজন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকার উপরে। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে। অবৈধভাবে একটানা সভাপতি হওয়া ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জানাযায়, বিধিমতে একজন জুনিয়র শিক্ষক অন্যকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেন না। এছাড়াও পর পর দুইবারের বেশি হওয়া যাবেনা। কিন্তু তৎকালীন সংসদ সদস্য খান টিপু সুলতানের আস্থাভাজন হওয়ায় বড় চেৎলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও হরিহরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রিপন কুমার ধর বিধি লঙ্ঘন করে ২০১০ সালে শৈলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক(ম্যানেজিং) কমিটির সভাপতি হন। ২০১১ এবং ২০১৩ সালেও তিনি নিয়মিত কমিটির সভাপতি হন। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী স্বপন ভট্টাচার্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। রাতারাতি রিপন কুমার ধর স্বপন ভট্টাচার্যের আনুগত্যলাভ করে আবারও ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হন। সেই থেকে টানা সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জুনিয়র পর্যায় থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নিত হওয়ামাত্রই ২০১১ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কিশোর কুমার দেবনাথ, প্রশান্ত মন্ডল, জসিম উদ্দিন,শিউলি রানী, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে আজাদুর রহমান, নিজাম উদ্দিন, রবিউল ইসলাম, অফিস সহকারি হিসেবে ই¯্রাফিল হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় ইউপি সদস্য মোসলেম আলী গাজী, অভিভাবক তরিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, আতিয়ার রহমান, ফিরোজ হোসেনসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, দলিয় প্রভাব এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের নাম ভাঙ্গিয়ে সভাপতি রিপন কুমার ধর ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম জোগসাজসে আটজন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে এক কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলেও রিপনের প্রভাবের কারনে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।
প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম জানান, নিয়োগ দিয়ে টাকা আদায়ের বিষয়টি তার জানা নেই। বিষয়টি সভাপতি ভাল বলতে পারবেন। তৎকালীন সভাপতি রিপন কুমার ধর জানান, নিয়োগ দিয়ে যে টাকা গ্রহন করা হয়েছিল তা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকরাম হোসেন খান জানান, জুনিয়র শিক্ষককে মাধ্যমিক স্তরের কোন প্রতিষ্ঠানের কমিটির সভাপতি করার বিধান নেই। তথ্যগোপন করে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে নিয়োগ দেওয়াটাও অপরাধ। তবে বর্তমান কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না জানান, এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button