জমা দেওয়া কমিটিকে পকেট কমিটি আখ্যা দেওয়ায় মহানগরের অনুমোদন মেলেনি !
# খানজাহান আলী থানা বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে তৃর্ণমূলকে উপেক্ষা করে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ #
# সার গোডাউন, ল্যাটে´সহ অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করায় নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ
স্টাফ রির্পোটার ঃ খানজাহান আলী থানা বিএনপির আহবায়ক কমিটির আহবায়ক কাজী মিজানুর রহমান এবং সদস্য সচিব আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাসের কর্মকান্ড নিয়ে দলের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে হামলা এবং মামলায় জরজরীত তৃর্ণমূলের নেতা-র্কর্মীদেরকে অবহেলা করে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার এবং তৃর্ণমূলের নেতা-র্কর্মীদের সাথে আলোচনা না করে দুই নেতার পছন্দের ব্যক্তিদের সমন্বয়ে থানা কমিটি জমা দেওয়ার দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। থানা এলাকার সার গোডাউন,ল্যাটেক্স, নদীর ঘাট, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই দুই নেতার কর্মকান্ড নিয়ে মহানগর বিএনপির কাছে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। দীর্ঘদিন অবহেলিত, নির্যাতিত, হামলা মামলার স্বিকার দলের তৃর্ণমূলের নেতা-কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দুই নেতাকে নিয়ে যে পোস্ট দিচ্ছে তাতে বিব্রত কর পরিস্থিতি পড়েছে দলের উর্ধতন নেতৃবৃন্দ। খানজাহান আলী থানা বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিব কর্তৃক প্রেরিত থানা কমিটিকে পকেট কমিটি আখ্যা দেওয়ায় অনুমোদন হয়নি জমা দেওয়া এই কমিটি। মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিবের বরাবর গত ৭ অক্টোবর আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শেখ সেলিম আহমদ একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি বলেন বিআইডব্লিউটিএ শিরোমনি সারগুদাম ঘাট ইজারা দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করলে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স শেখ ট্রেডাসের নামে ক্রয় করা দরপত্রটি গত ১০/৯/ ২০২৪ তারিখ খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দিতে যাই। সেখানে পৌছানোর পর কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতিকারী আমাকে টেন্ডার বক্সে দরপত্র ফেলার কাজে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করে, আমি তাদের কাছে আমাকে দরপত্র ফেলতে কেন বাঁধা দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তারা উত্তরে বলে খানজাহান আলী থানা বিএনপির আহবায়ক কাজী মিজানুর রহমান আমাদেরকে পাঠিয়েছে তুই এখানে দরপত্র ফেলতে পারবি না। এরপরও যখন আমি দরপত্রের বাক্সে জমা দিতে গেলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও আমার উপরে চড়াও হয় এবং আমার হাতে থাকা দরপত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় থানা বিএনপির আহবায়ক কাজী মিজান ফোনে আমাকে বলে তুই দরপত্র ফেলতে আসছিস তোর সাহস কত বড়? তুই ওখান থেকে জীবন নিয়ে চলে যা, অন্যথায় তোকে দোতলা থেকে ফেলে দেওয়া হবে আমি থানা এলাকার সর্বোচ্চ বড় নেতা আমিই কাজ পাব, বাঁচতে যদি চাস ওখান থেকে চলে যা’ । আমি ও আমার বড় ভাই শেখ আব্দুল হালিম দরপত্র জমা দিতে গেলে দুষ্কৃতিকারীরা আমাদেরকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে ডিসি অফিসের দোতলা থেকে উঁচু করে ফেলে দিতে উদ্যত হয় এবং একজন আমার হাত থেকে দরপত্রটি কেড়ে নিয়ে যায়। খানজাহান আলী থানা বিএনপির আহবায়ক কাজী মিজানুর রহমান ও সদস্য সচিব আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাসের বিরুদ্ধে সার গোডাউন, লাটেক্স, নদীর ঘাট, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ আছে ফুলবাড়ীগেট বাজার বনিক সমিতির নির্বাচন না দিয়ে দীর্ঘদিন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বেগ লিয়াকত আলী ক্ষমতার দাপটে সভাপতির পদ আখড়ে ধরে বাজার নিয়ন্ত্রন করতো। প্রেক্ষাপট পরিবর্তনে বিএনপির একটি পক্ষ বেগ লিয়াকত আলীর অফিসে গেলে থানা বিএনপির সদস্য সচিবের অনুসারীরা তাদেরকে ধাওয়া করে তাদেরকে সরিয়ে দেয়। এছাড়াও খানজাহান আলী থানা বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে পকেট কমিটি গঠন করার অভিযোগ করেছে আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক ও সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক। এ বিষয়ে তারা মহানগর বিএনপির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। লিখিত অভিযোগ তারা বলেন খানজাহান আলী থানা বি,এন,পির পূর্নাঙ্গ আহবায়ক কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে, থানা বি,এন,পির আহবায়ক কাজী মিজানুর রহমান ও সদস্য সচিব আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস নিজেদের ইচ্ছামত তাদের অনুসারিদের সমন্বয়ে কমিটি জমা দিয়াছেন। তাদের দাবী খানজাহান আলী থানাধীন কেসিসি ২নং ওয়ার্ড এবং আটরা গিলাতলা ও যোগিপোল ইউনিয়ন রয়েছে। ৩টি ইউনিট নিয়ে খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক কমিটি গঠিত। থানা আহবায়ক কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ ছাড়াই থানা কমিটি করে জমা দেওয়া হয়েছে।
খানজাহান আলী থানা বিএনপির আহবায়ক কাজী মিজান ও সদস্য সচিব আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাসকে নিয়ে ক্ষোভ দলের তৃর্ণমূলের নেতা-কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে পোষ্ট দিচ্ছে তাতে দলের উর্ধতন নেতারা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছে। রাজপথে থেকে মামলা হামলার স্বিকার এমন একাধিক নেতা তাদের ফেজবুক এই দুই নেতাকে উদ্দেশ্যে করে লিখেছেন‘‘ সুবিধা নিয়ে ব্যবসা করতে গেলে থানা বিএনপির সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক হতে হবে। তাহলে সার গোডাউন, ল্যাটেক্স, নদীর ঘাটসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়ন্ত্রন নেওয়া যাবে। এ বিষয়ে তারা মহানগর বিএনপির তদন্ত সেলের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন। মহানগর বিএনপির আহবায়ক এ্যাড.শফিকুল আলম মনা অভিযোগের বিষয়ে বলেন দুটি ইউনিয়ন এবং একটি ওয়ার্ডের কনভেনার এবং মেম্বর সেক্রেটারীদের সমন্বয়ে বসে একমত হয়ে সকলের স্বাক্ষরিত কমিটি অনুমোদন হবে। সকলের সমন্বয় এবং মতামতের বাহিরে গিয়ে দুই নেতার দেওয়া জমা খানজাহান আলী থানা কমিটি অনুমোদনের কোন সুযোগ নাই। অপরদিকে, মহানগর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ও বিএনপির তদন্ত সেলের প্রধান সৈয়দ রেহানা ঈসা বলেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে সাংগঠনিক ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।