জাতীয় সংবাদ

ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় দুই দিনে প্রায় চারশ’ ফিলিস্তিনি নিহত

নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ১শ’ ছুইছুই

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত দু’দিনে প্রায় ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এরই মধ্যে সেখানে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২০,০০০ ছাড়িয়ে গেছে। আর সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বোমার আঘাতে নিহত হয়েছেন ৯৯জন কর্মরত সাংবাদিক। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার রাতে তাদের সর্বশেষ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বোমাবর্ষণে নারী ও শিশুসহ ৩৯০ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৭৩৪ জন আহত হয়েছে। এর ফলে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ২০,০৫৭ জনে পৌঁছেছে, যাদের মধ্যে অন্তত ৮,০০০ শিশু ও ৬,২০০ নারী রয়েছেন। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ গাজা উপত্যকাকে ‘শিশুদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান’ বলে অভিহিত করেছে। ইউনিসেফের পশ্চিম এশিয়া, পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকা বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক অ্যাডেলে খোদর বলেছেন, শিশুদের বসবাস, খেলাধুলা ও স্কুল গমনের নিরাপদ স্থান হিসেবে বিবেচিত গাজার বহু আবাসিক এলাকা এখন সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে এবং এসব স্থানে এখন আর প্রাণের কোনও অস্তিত্ব নেই।
অপরদিকে গাজায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ১০০ ছুঁইছুঁই করছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর গত আড়াই মাসের অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৯৯ জন সাংবাদিক। উপত্যকার সরকারি জনসংযোগ বিভাগ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এ তথ্য। জনসংযোগ বিভাগের বিবৃতির তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ নিহত সাংবাদিকের নাম মোহাম্মদ খলিফা। তিনি উপত্যকার হামাসপন্থী টেলিভিশন চ্যানেল আল-আকসা টিভিতে কর্মরত ছিলেন। ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর (আইএএফ) গোলা বর্ষণে ঘর বাড়ি হারিয়ে স্ত্রী ও তিন সন্তানসহ গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি।
জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, শুক্রবার নুসেইরাত শিবিরে অভিযান চালিয়েছে আইডিএফ। সেই অভিযানে সপরিবারে নিহত হয়েছেন খলিফা। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু,অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৫২ হাজার ৫৮৬ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৬ হাজার ৭০০ জন। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে। অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। বস্তুত ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের গত আড়াই মাসে সেখানে যত সংবাদকর্মী নিহত হয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী আর কোনো যুদ্ধে এত সংবাদকর্মী নিহতের নজির নেই।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button