সম্পাদকীয়

চাকরির বাজারে অপরাধ ও দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করা হোক

সাম্প্রতিক সময়ে পুরো জাঁতি অনিয়ম দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে চাকরি পাওয়ার জন্য যখন মানুষ দিশাহারা, বেকার নারী-পুরুষ চাকরির আশায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক এটাকেই পুঁজি করছে একশ্রেণির প্রতারকচক্র। বাংলাদেশে অধিকাংশ সরকারি চাকরিতে ঘুষ দেয়া এখন অলিখিত একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। কেউ যদি উপরি না দিয়ে চাকরি পান তার সৌভাগ্য। তবে ঘুষ দিয়ে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা বহু ঘটছে। লোকেদের কাছ থেকে চাকরি দেয়ার নামে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। আবার অনেকে ঘুষ দিয়েও চাকরি পাননি, এমনকি অর্থও ফেরত পাননি। বর্তমানে এমন ঘটনা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষমতাসীনদের কাছে প্রতারণা ও মারধরের শিকার হয়ে প্রতিকার পাওয়ার বদলে উল্টো মামলা-হামলার শিকার হতে হয়। সাধারণ মানুষ ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিকার পান না। এখন জালিয়াতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, সরকারের প্রশাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম। দেশে যে হারে শিক্ষিত বাড়ছে, সে হারে কর্মক্ষেত্র বাড়ছে না। ফলে অনেকেই বেকার থেকে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় ভয়ঙ্কর এসব প্রতারকরা পোশাক কারখানায়, সিকিউরিটি গার্ডসহ বিভিন্ন কোম্পানিতে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি দেয়ার নামে বেকার তরুণ-তরুণীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তার পাশে, দেয়ালে, বাসে লোভনীয় চাকরির বিজ্ঞপ্তির পোস্টার সেঁটে অথবা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রতারকচক্র আকৃষ্ট করছে বেকার তরুণ-তরুণীদের। প্রতারকচক্রের প্রধান টার্গেট বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম চাকরির কথা বলে তাদের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। এরপর নানা কৌশলে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যাংক, বীমা, এমএলএম কোম্পানি, বিপণন কোম্পানি, মার্কেটিং কোম্পানির নামে বেশি প্রতারণা করা হচ্ছে। তাই প্রতারকচক্রগুলোর বিরুদ্ধে আমাদেরই রুখে দাড়াতে হবে। চাকরি দেয়ার নামে যারা নানা প্রলোভন দেখান তাদের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং প্রতারকদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতা জরুরি। যেন আর কোনো বেকার প্রতারণার স্বীকার না হয়। ফেসবুকের বিভিন্ন জন সাইটগুলো বন্ধ করতে হবে, তদারকির মাধ্যমে সঠিক জব পোর্ট গুলো রেখে বাকিগুলো নিষিদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অদক্ষ নয়। যারা দুর্র্ধষ জঙ্গি ও মাদক পাচার চক্রের হোতাদের পাকড়াও করতে পারে, তারা কেন এই প্রতারক চক্রকে ধরতে পারবে না? ফলে নিঃস্ব ও অসহায় মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে সুরক্ষা দিতে আইনের যথাযথ ব্যবহার চাই। প্রতারক চক্রের উপযুক্ত শাস্তিই পারে এ ধরনের অপরাধ ও দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button