সম্পাদকীয়

ডাক্তার স্বল্পতায় ভুকছে সরকারি হাসপাতাল গুলো

অসুস্থ ব্যক্তিরা রোগ নির্মূলের জন্য হাসপাতালের শরণাপন্ন হন। উন্নত মানের চিকিৎসার মাধ্যমে একজন রোগী অসুস্থ থেকে সুস্থ হন। শারীরিক শান্তির জন্য মানুষ চিকিৎসা সেবায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে থাকেন। কিন্তু সুচিকিৎসা যদি সঠিক সময়ে না করে পরে করা হয় তখন রোগীর বেঁচে থাকাটাও দায় হয়ে দাঁড়ায়। ডাক্তারদের পরামর্শ অসুস্থতার সাথে সাথে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে ডাক্তার দেখানো। কিন্তু প্রশ্ন হলো দ্রুত হাসপাতালে এনেও যদি সঠিক সময়ে ডাক্তার দেখাতে না পারে তখন কী করণীয়? সম্প্রতি সংবাদ পত্রে এমনি একটি ঘটনা নিয়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে ঝিনাইদহের সরকারি হাসপাতাল গুলোর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, ঝিনাইদহ জেলায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। বিশেষ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে তা প্রবল। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংকট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে সেবা। আবার চিকিৎসক থাকলেও কাক্সিক্ষত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে রোগীদের। জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ জেলায় সদর হাসপাতালসহ উপজেলা হাসপাতালগুলোতে মোট চিকিৎসকের পদ আছে ২৪৬টি। এর মধ্যে ১২৬ জন চিকিৎসক থাকলেও শূন্য রয়েছে ১২০ পদ। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের মোট পদ আছে ৬৩টি। চিকিৎসক আছেন ৪২ জন। পদ শূন্য ২১টি। সদর হাসপাতালে জুনিয়র সিনিয়র মিলিয়ে ১১ জন কনসালট্যান্ট চিকিৎসকের পদ শূন্য আছে। শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ৩৭ পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১৭ জন। পদ শূন্য ২০টি। এদিকে হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও চিকিৎসা চলছে ৫০ শয্যার সেটআপ দিয়ে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ৩৩ পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১২ জন। পদ শূন্য ২১ চিকিৎসকের। এ ছাড়া ঝিনাইদহ জেলায় ১৩টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। এগুলো প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত। প্রায় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো ব্রিটিশ আমলে স্থাপিত। অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসক পোস্টিং দিলেও সেখানে কেউ যান না। কেন্দ্রগুলো পরিচালনা করেন উপসহকারী মেডিকেল অফিসাররা (মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট)। দেশের জনস্বার্থে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছেন ভবন নির্মাণে অথচ অবাক করার বিষয় হলো এত টাকা ব্যয় করেও জনস্বার্থে আসছে না সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ! এর জবাবদিহিতা কে দিবে? যদি সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা নাই দেওয়া হয় তাহলে কেনো বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে ভবন নির্মাণে। তাহলে কী লোক দেখানোর কারণে এমন ভবন নির্মাণ হয়েছে? বাস্তবতা তাই বলতেছে। আমরা চাই সরকারি সকল হাসপাতালে অভিজ্ঞ ডাক্তার দ¦ারা রোগীরা সঠিক চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করুক। আমরা এমন লোক দেখানো অকেজো ভবন দেখতে চাই না। মানুষের উপকারে আসুক এই হাসপাতাল গুলো এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আশা করি সরকার ওই বিষয়ে নজরদারি করে নিয়োগের মাধ্যমে অভিজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে ডাক্তার স্বল্পতা পরিপূর্ণ করবেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button