সম্পাদকীয়

দেশের অচলাবস্থা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নিন

দেশের অর্থনীতি আড়াই বছর ধরে দুর্বল অবস্থায় আছে। তার ওপর এখন খাঁড়ার ঘা। কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা, ইন্টারনেট বন্ধ ও নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটির কারণে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকা-ে স্থবিরতা নেমে আসে। আমদানি-রপ্তানিসহ শিল্পের চাকা বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ মানুষের দৈনন্দিন চলাচলও বাধাগ্রস্ত হয়। এসব কারণে অর্থনীতিতে প্রতিদিন গড়ে ১০০ কোটি ডলার বা ১১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় না ফিরলে অর্থনীতির জন্য কিছু করার চিন্তা করে লাভ হবে না। যদিও ডলার-সংকট, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের অর্থনীতি আগে থেকেই বেশ চাপে। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতা, কারফিউ জারি, ইন্টারনেট সেবা বন্ধের মতো কঠোর পদক্ষেপ যে অর্থনীতিকে কঠিন অবস্থার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। অর্থনীতির ক্ষতি হয়তো টাকার অঙ্কে মাপা যায়, কিন্তু দেশের ভাবমূর্তির যে ক্ষতি হয়েছে, তা মাপার কোনো বাটখারা নেই। তাই দেশের অর্থনীতিতে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, তা সমাধানে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে তার আগে সরকারকে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। তারপর অর্থনীতির ক্ষত নিয়ে ভবিষ্যৎ করণীয় ঠিক করতে হবে। তবেই সংকট থেকে উত্তরণ সহজ হবে। বর্তমানে ১৩ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহকের মধ্যে এক কোটি ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারী। এর মধ্যে অবশ্য ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে এখনো ঠিকভাবে কাজ করা যাচ্ছে না। আর বেশির ভাগ মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। তাঁরা মোবাইলের মাধ্যমে অনেক কাজ করেন। ফলে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পাশাপাশি ইন্টারনেট পুরোপুরি চালু করতে হবে। কারফিউ তুলে নেওয়া এবং নিরাপত্তাহীনতা দূর করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে কিভাবে বুঝবেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর পর পরিস্থিতির উন্নতি হলে তখন অর্থনীতি গতিশীল হবে। এই ক্ষতি আর বাড়তে দেওয়া যায় না। জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সব নাগরিকের নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের পাশাপাশি ভয়হীন পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক। এই মুহূর্তে ব্যবসা-বাণিজ্য পুরোপুরি সক্রিয় করতে পারলে অর্থনীতি দ্রুত স্বাভাবিক গতিতে আসবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button