সম্পাদকীয়

পোশাক শিল্পের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে হবে

ক্ষতির মুখে উদ্যোক্তারা

চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে সহিংসতায় ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বিভিন্ন রপ্তানিনির্ভর প্রতিষ্ঠানের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে যাওয়া, উৎপাদন কমে যাওয়া, গ্যাস সংকট, প্রায় ২৫০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি, শ্রমিকদের ৭০ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি, ব্যাংকঋণের সুদহার বৃদ্ধি, গৃহীত বিল পরিশোধ না হওয়া, চলতি পুঁজির ঘাটতি এবং তুলা ও অন্যান্য কাঁচামাল আমদানিতে এলসি খুলতে ব্যাংকের অনীহা, সর্বোপরি নগদ সহায়তা কমানো, এসব কারণে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমছে। এ কারণে শিল্পের উদ্যোক্তারা অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের বেতন দিতে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়াসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। একই সঙ্গে চলমান ঋণের কিস্তি স্থগিতের দাবি করেছে সংগঠনটি। চিঠিতে সংগঠনটি বলছে, ক্রমাগত লোকসানে থাকা প্রচ্ছন্ন রপ্তানিমুখী ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের পক্ষে এখন মেয়াদি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা কঠিন। এ অবস্থায় সব মেয়াদি ঋণ আগামী ছয় মাসের জন্য সুদবিহীন করে কিস্তি পরিশোধ স্থগিত রাখার দাবি করেছে তারা। বিটিএমএর সদস্যভুক্ত কারখানাগুলো ব্যাক টু ব্যাক এলসির মাধ্যমে সরবরাহকৃত সুতা ও কাপড়ের বিপরীতে তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট এলসি প্রদানকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেসব বিল গ্রহণ করেছে, তা যথাসময়ে পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করা হয়েছে। এ বিলের অর্থ পাওয়া গেলে সদস্য কারখানাগুলো কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় চলতি পুঁজির সংকট থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবে। অন্যথায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে ব্যত্যয় ঘটতে পারে। কারণ গত দুই সপ্তাহের অরাজক পরিস্থিতির কারণে রপ্তানি খাতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝানো যাবে না। পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা ভয়াবহ কঠিন সময় পার করছেন। এরইমধ্যে উদ্যোক্তাদের ওপর গত মাসে বেতন পরিশোধের চাপ চলে এসেছে। ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ না পেলে ভিন্ন একটি বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তবে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে শেষ পর্যন্ত আদৌ সহায়তা মিলবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি সব উদ্যোক্তাই কমবেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাই এমন পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলোকে মানবিক হতে হবে। এ বিলের অর্থ পাওয়া গেলে সদস্য কারখানাগুলো কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় চলতি পুঁজির সংকট থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করা গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি গার্মেন্টস শিল্পে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button