সম্পাদকীয়

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত জরুরি

গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। কিন্তু বিশ্বে এমনও আলোচনা হয়েছে গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ নয়, প্রথম স্তম্ভ। সত্য প্রকাশে নির্ভীক ও জাগ্রত মানসিকতায় অন্যায় ও দুষ্কৃতকারীদের দুর্গ গুড়িয়ে দিয়ে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় অপ্রতিরোধ্য ভূমিকা রাখে এই গণমাধ্যম। এছাড়াও গণমাধ্যমকর্মীরা সত্য প্রকাশে অনেক সময় নিজেদের জীবন ঝুঁকি নিতেও পিছপা হোন না। এভাবে প্রতিনিয়তই গণমাধ্যম দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। মিডিয়া একটি রাষ্ট্রের শক্তির চেয়েও বেশি শক্তিশালী। কারণ সরকার যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন মিডিয়া অন্যায়কে প্রকাশ করে দিয়ে একটি রাষ্ট্রকে ভাঙতে পারে, নতুনভাবে গড়তেও পারে। গণমাধ্যম জনগণকে শিক্ষিত করে এবং সর্বশেষ তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারের মাধ্যমে তাদের বুদ্ধিমান করে। গণমাধ্যম জনগণকে স্থানীয় ও বিশ্বব্যাপী জানায় এবং তাদের ক্ষমতা প্রদান করে। এ কারণে গণমাধ্যমকে বিশ্বের জনগণের ক্ষমতার উৎস বলা হয়। মুদ্রণ ও ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের দ্বারা সর্ব শেষ খবর পাওয়ার মাধ্যমে মানুষ রাষ্ট্রের ক্ষমতার উৎস হয়ে ওঠে। দেশের সমস্যা ও সমাধান, জনগণের চাহিদা ও দাবিপূরণ, গণতন্ত্র ও সুশাসন কীভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারা যায়, তা গণমাধ্যম সরকারকে জানাতে সাহায্য করে। আমরা জানি, আমাদের বাংলাদেশে অধিক সংখ্যক সাংবাদিক জাতির জন্য খাবার ছাড়া ২৪ ঘণ্টা খবর সংগ্রহ করেন। দুর্যোগ, যুদ্ধ ও সংঘর্ষের সময় সাংবাদিকরা তাদের জীবন ঝুঁকিতে রেখে সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচার করেন। এভাবে জনগণ জানতে পারে, কোথায়, কখন এবং কেন কি হচ্ছে, খবরটির পেছনে কে আর কি ঘটছে? আমাদের দেশে অনেক সাংবাদিক অসীম দারিদ্র্য নিয়ে বসবাস করেন, তবুও তারা দেশের প্রতি তাদের প্রতিশ্র¤œতি পালন করে মর্যাদা দিয়ে কাজ করেন। টাকা তাদের দর্শন ও নীতিকে কিনতে পারে না। ফলস্বরূপ, আমাদের দেশ ও বিশ্বের কিছু দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি ও নেতারা সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ওপর রাগান্বিত ও বিরক্তবোধ করে। আমরা ইতিহাস থেকে শিখেছি যে শান্তি ও বন্ধুত্ব একত্রে চলে। আমরা যদি শান্তি চাই, তাহলে আমাদের শান্তিপূর্ণ মনোভাব তৈরি করতে হবে এবং বন্ধুত তৈরির জন্য আমাদের অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ হতে হবে। তাই প্রথম থেকেই গণমাধ্যম বিশ্বের শান্তি ও মানবাধিকারের অনুঘটক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হলে দেশের সরকারকে অবশ্যই তথ্যপ্রবাহ, জনগণের জন্য তথ্য অধিকার এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button