ডেঙ্গু মোকাবেলায় নজর দিন

বৃষ্টিপাত-বন্যা
শুধু রাজধানী বা বড় শহরগুলোতে নয়, ডেঙ্গু এবার সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ, মৃতের সংখ্যাও প্রতিদিন বাড়ছে। এ অবস্থায় টানা বৃষ্টি ও চলমান বন্যার পানি নেমে গেলে এর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে। ডেঙ্গু সারা বছরই হতে পারে, তবে বর্ষায় এর সংক্রমণ অনেক বৃদ্ধি পায়। কারণ এ সময় মশার প্রজনন বেশি হয় এবং মশার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এজন্য বর্ষা আসার আগে থেকে শুরু করে পুরো বর্ষা মৌসুমেই মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করতে হয়। কিন্তু এ বছর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও অনেক কাউন্সিলর দায়িত্ব পালন থেকে দূরে সরে আছেন। এতে হয়তো অভিযান পরিচালনায় কিছুটা সমস্যা হতে পারে। তবে আমরা আশা করি, সিটি করপোরেশনের অন্যরা সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে সামলে নেবেন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নাগরিক সচেতনতাও অত্যন্ত জরুরি। দেখা যায়, ব্যবহারের পর প্লাস্টিকের কাপ, বোতল, পলিথিন ব্যাগ এবং অন্যান্য বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেলে দেওয়া হয়। এগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে যায় এবং খুব সামান্য পানিতেই এডিস মশা বংশবিস্তার করতে পারে। নির্মাণাধীন বাড়িগুলোতে জমিয়ে রাখা পানিতে ব্যাপকভাবে মশা বংশবিস্তার করে। এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট সচেতনতার পরিচয় দিতে হবে। ডেঙ্গু ছাড়াও আমাদের দেশে মশাবাহিত আরো কিছু রোগের বিস্তার রয়েছে। এর মধ্যে আছে ম্যালেরিয়া, চিকনগুনিয়া, ফাইলেরিয়া, জাপানি এনকেফালাইটিস ইত্যাদি। তাই শুধু এডিস নয়, সব ধরনের মশা নিধনেই আমাদের ব্যাপক উদ্যোগ থাকা প্রয়োজন। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে হলে মশা নিধন করতেই হবে। আমরা আশা করি, সিটি করপোরেশনগুলো কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। পাশাপাশি নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার বিদ্যমান দুর্বলতাগুলোও দূর করতে হবে। এছাড়া বন্যা পরবর্তী সময়ে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার বংশবিস্তার যেন না হয় সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। এ বিষয়ে বন্যাকবলিত অঞ্চলের সিটি করপোরেন, পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। বন্যার পরে যেহেতু নানা রকম রোগের বিস্তার দেখা যায়, সেগুলোর আড়ালে প্রাণঘাতী ডেঙ্গু যেন চাপা পড়ে না যায়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।