সম্পাদকীয়

ফের বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, জরুরি যৌক্তিক সমাধানের

সাম্প্রতিক বাংলাদেশে একটি গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকার পতনসহ বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরে। তাই দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিযুক্ত হয়ে এখন দেশ সংস্কারের কাজ চলছে। দেশের এমন বেহাল অবস্থার মধ্যে দিয়ে যখন বাড়তি চাপ পড়ে সরকারের উপর তখন সরকারের পক্ষে দেশ সংস্কার করাটা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। সম্প্রতি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে; যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত ঘটনা। গত ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে বিপদে পড়ে আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়ের ৭ বছর হলো, তাই গত মাসে তাদের গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে দেশে ফেরত যাওয়ার কথা তুলে ধরেছেন তাঁরা। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো ইতোমধ্যে আবারো নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করেছে রোহিঙ্গারা। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, মিয়ানমারের চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির পরিণামে বাংলাদেশে ফের নেমেছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল। প্রতিদিনই শ’য়ে শ’য়ে রোহিঙ্গা ঢুকছে কক্সবাজার জেলায়। বেসরকারি হিসাবে গত এক মাসে কমপক্ষে ২০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। পত্রপত্রিকার খবরাখবর থেকে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া সরকারি বাহিনী ও আরাকান আর্মির লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে। আরাকান আর্মি এরই মধ্যে রাখাইনের ৮০ শতাংশের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী চৌকিগুলো প্রায় দখলে নিয়েছে। এখন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মংডু টাউনশিপ ও আশপাশের এলাকায় তীব্র যুদ্ধ চলছে। এ যুদ্ধে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরও জ¦ালিয়ে দিচ্ছে আরাকান আর্মি। এরই মধ্যে মংডু টাউনশিপের পাশের পাঁচ গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে উচ্ছেদ করেছে আরাকান আর্মি। মংডু এবং আশপাশের এলাকায় ৩ লাখের অধিক রোহিঙ্গা বসবাস করে। জীবন বাঁচাতে সীমান্তের এপারে ছুটে আসছে রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) বাধা দিলেও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মানবপাচারকারী দালালরা রোহিঙ্গাদের দেশের ভিতরে নিয়ে আসছে। কাঠের নৌকা করে নাফ নদ ও উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন ঘটনা খুবই উদ্বেগ জনক। রোহিঙ্গা প্রবেশ বন্ধ না করলে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়তে হবে বাংলাদেশকে। তাই এখনি যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়াটা জরুরি। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরে রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার অনুমোদন ছাড়া যেন আর একজনও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে বিজিবি’কে নজরদারি বাড়াতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করব, সরকার রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে একটি যৌক্তিক সমাধান করবেন।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button