নির্ধারিত দাম মানছে না বিক্রেতা: বাজার মনিটরিং জরুরি

বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ^াস উঠে গেছে। শুধু বর্তমান নয়, বিগত কয়েক বছর থেকেই আকস্মিক করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে মূল্যে। যে পণ্য একবার মাত্রাতিরিক্ত দাম বেড়ে যায় ঐ পণ্যের দাম আর কমে না। বরং মাত্রাতিরিক্ত থেকে সামান্য কমানো হয়, তাও মাঝে মধ্যে। এমন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে মানুষ দৈনন্দিন খাবার ব্যবস্থা সামলানোই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মূল কারণ হলো সকল পণ্যর দাম বাড়লেও বাড়েনি মানুষের আয় রোজগার। তাই সকলের এখন একটাই দাবি দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণ করা। গত জুলাইয়ে সরকার পতনের পরে দেশ পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। সকল স্তরের মানুষের এই সরকারের কাছে একটাই চাওয়া তা হলো দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণ করা। উদ্বেগের বিষয় হলো বিগত সরকারের আমলের মতই এখন দেশে চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট চক্র রয়ে গেছে, তাই নিত্যপণ্যের দাম আগের মতই রয়ে গেছে। তবে সম্প্রতি সরকারি উদ্যোগে জনমনে কিছুটা স্বস্তির খবর দিলেও তার ফলাফল বাস্তবায়ন হতে দেখেনি জনগণ। সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সরকারিভাবে মুরগির ডিম, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। অধিদপ্তরের নতুন দর অনুসারে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা ও সোনালি মুরগি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। তাতে প্রতি ডজন ডিমের দাম পড়ে ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। অভিযোগ উঠেছে, বেঁধে দেওয়া ওই দামে এই তিন পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আগের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম ও মুরগি। পত্রপত্রিকার খবরাখবর থেকে জানা যায়, রাজধানীর খিলক্ষেত, নতুনবাজার, মহাখালী কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে সরকারের নির্ধারিত ডিম ও মুরগির দাম মানছে না রাজধানীর বিক্রেতারা। প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। আর প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা দরে। আর ডজনের দাম ১৬০ টাকা। একইভাবে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগিও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা। কোনো কোনো বাজারে ২০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির প্রতি কেজির দাম বাজারভেদে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজন সঠিক তদন্তের। অধিকাংশ বাজারে সিন্ডিকেট চক্র, চাঁদাবাজ, দখলদার ইত্যাদির কারণে বিক্রেতারা ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারেন না নিত্যপণ্যে। এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে। বাজারের সকল সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব বন্ধ করতে পারলে জনমনে স্বস্তি ফিরবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।