সম্পাদকীয়

বাংলাদেশে ভূমিকম্প সতর্কতা বাড়াতে হবে

বাংলাদেশে এক সপ্তাহের মধ্যে দুবার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার ঘটনা উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। ৩ জানুয়ারি এবং ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে দুটি ভূমিকম্পের কম্পন রেকর্ড করা হয়েছে, যা এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনুভূত হয়েছে। যদিও এর উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশ থেকে দূরের এলাকা, তবুও এ ধরনের ঘটনা আমাদের জন্য সতর্কতা সংকেত। বাংলাদেশের ভূমিকম্পের প্রভাব না হলেও, এর সিগন্যাল প্রভাব ফেলতে পারে। ৩ জানুয়ারি হওয়া ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ছিল মিয়ানমারের হোমালিন থেকে, আর গতকাল মঙ্গলবার ভূমিকম্পটির উৎপত্তি চীনের জিজাং এলাকা থেকে। এ ধরনের ভূমিকম্পগুলি পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে হয়, যা পৃথিবীর ভূত্বককে কাঁপিয়ে তোলে এবং এই শক্তি পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে অনুভূত হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য এই ভূমিকম্পগুলোর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায়নি, তবে এর ভবিষ্যৎ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি। বিশেষত, ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থানরত বাংলাদেশে, যেখানে বহু মানুষ বাড়ি, প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পাঞ্চলে বসবাস করছে, সেখানে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ঝুঁকি যথেষ্ট রয়েছে। এ প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল এবং সিলেট অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ গঠন এমনভাবে তৈরি যে, এখানে ভবিষ্যতে ভূমিকম্পের আঘাত হতে পারে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে ভূমিকম্পে ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে, তবে আমাদের ভূমিকম্পের মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নেই। তিব্বতে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পে চীনে যে বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এটি বাংলাদেশের জন্য সতর্কতার বড় একটি কারণ। একইভাবে, ভারত ও নেপালের বিভিন্ন অংশেও এই ভূমিকম্পের প্রভাব অনুভূত হয়েছে। এর ফলে জানা যাচ্ছে যে, ভূমিকম্পের প্রভাব এক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং তা অন্য অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অতএব, এখন করণীয় হলো ভূমিকম্পের প্রস্তুতি নেওয়া, অবকাঠামোগত উন্নতি করা, এবং জনগণের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চালানো। এছাড়া, আরও উন্নত প্রযুক্তি এবং তথ্যভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে ভবিষ্যতের ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া এবং দ্রুত উদ্ধার কাজের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা জরুরি। সরকার এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উচিত, এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি আরো সুসংগঠিত করা। ভূমিকম্পের প্রভাব বিশাল হতে পারে, তাই আমাদের এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক এবং প্রস্তুত থাকতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button