দাম কমেনি আলু পেঁয়াজের : চড়া সবজির বাজার
# খুলনায় সবজির দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ১৫-২০ টাকা, চালের দাম ২-৪ টাকা বাড়তি #
কামাল মোস্তফা ঃ আলুর দাম যেন কমার নাম নেই, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। সবজির দাম লাগামহীন। কেজি প্রতি বেড়েছে ১৫-২০ টাকা। চাল ও পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে শুল্ক প্রত্যাহার করে আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবুও প্রভাব পড়েনি বাজারে। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। খুচরা বাজারে এক কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ১৪৫-১৫০ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ১২০-১২৫ টাকায়। আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা কেজি দরে। দেশি রসুন ২৮০ টাকা এবং চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে লিটার প্রতি ১৭০ টাকায়, খোলা তেল ১৬৭ টাকা। আবুল হাসান পেশায় একজন ফ্রিল্যান্সার। ময়লাপোতা সন্ধা বাজারে এসেছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে। তিনি বলেন, জুলাই আগস্টে আন্দোলন চলাকালে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখায় আমার মত ফ্রিল্যান্সাররা কাজ হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। পরিবার নিয়ে বেচে থাকাই দায়। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে কিছু সবজির দাম। ফুলকপি ১৮০-২০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৭০ টাকা, বেগুন ১১০-১২০ টাকা, পোটল ৭০ টাকা, লালশাক ৬০ টাকা। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ঝিঙ্গা,সিম,লাউ সহ বেশ কিছু সবজি। সবজি বিক্রেতা নাসিম বলেন, সবজি কেবল আসতে শুরু করেছে, এজন্য দাম একটু বেশি। আমাদের পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, এজন্য বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে শীতকালিন সবজির সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে।
গল্লামারী বাজারে সকালে মিষ্টি কুমড়া কিনছিলেন মোহসীন রেজা। তিনি বলেন, দেশে মিষ্টি কুমড়া কি আমদানি করতে হয়, না এর উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মিষ্টি কুমড়া ৩০-৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হয় সবসময়, কোন যুক্তিতে তা ৭০ টাকা হয়। নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চালের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি বেড়েছে ২-৪ টাকা। মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়। মোটা চাল ছিল ৫২ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। এছাড়া নাজিরশাহ ৮০ টাকা, বালাম ৬৫ টাকা। খুলনা বড় বাজার এলাকার পাইকারি চাল বিক্রেতা আশরাফ হোসেন বলেন, ধানের মৌসুম শেষ হওয়ায় সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাছাড়া এ বছর অতি বৃষ্টির কারণে বীজতলা কয়েকবার নষ্ট হয়েছে। মিল মালিকরা দাম বাড়ানোয় আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। মাংসের বাজারও কিছুটা বাড়তি, ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা। গরুর মাংস আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকায়। এ ছাড়া খাশির মাংশ ৯৫০-১০০০ টাকা। চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়, ডাল ১৩৫ টাকা, এলাচ ৪০০০ টাকা, জিরা মান ভেদে ৭০০-১০০০ টাকায়। তবে আটার দাম ৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৬ টাকা। এদিকে মাছের দাম কিছুটা কমতির দিকে। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি ওজনের ভেটকি মাছ ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, পাবদা ৩৫০-৪০০ টাকায়, দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের পাঙ্গাস ১৮০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ময়লাপোতা কেসিসি সন্ধা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি চাই নিত্যপণ্যের দাম কমুক। যে দামে কিনতে হচ্ছে তার থেকে কিছু লাভ রেখেই আমাদের বিক্রি করতে হয়।
খুলনা জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারি পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব বলেন, আমাদের অভিযান চলমান। যেখানে ব্যবসায়ীরা ক্রয় চালান দেখাতে পারছে না বা বেশি দামে বিক্রি করছে সেখানেই আমরা তাদের জরিমানা করছি। আজও নগরীতে কয়েকটি প্রতিষ্টানকে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করতে পারায় জরিমানা করা হয়েছে।