গাড়াখোলা মাদ্রাসায় এতিমখানা না থাকলেও এতিমদেও নামে সরকারি চাল আত্মসাতের প্রতিবাদে মানববন্ধন
# তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসনীম জাহান #
সাইফুল্লাহ তারেকঃ ফুলতলা উপজেলার গাড়াখোলা দাখিল মাদ্রাসায় লিল্লাহ বোডিং না থাকলেও এতিমদের সাাহার্যের জন্য ৭৫ মন জিআর চাল উত্তোলন ও আত্মসাৎ এর অভিযোগ সুপার শাহজাহান হুসাইনসহ ৫ ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সুপারের অপসারণ ও সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে সোমবার বেলা ১১টায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে এলাকাবাসি।
অভিযোগে জানা যায়, ফুলতলা উপজেলার গাড়াখোলা দাখিল মাদ্রাসায় কোন লিল্লাহ বোডিং নেই। তবে গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের ২৪ জুলাই এতিমদের খাবারের জন্য ৭৫ মন সরকারি চাল উত্তোলন করা হয়। জিআর চাল উত্তোলনের কমিটিতে ওই মাদ্রাসা সুপার মোঃ শাহাজাহান হুসাইনকে সভাপতি, শিক্ষক ফিরোজ হোসেন মোড়লকে সেক্রেটারী, সহকারী সুপার মোঃ রওশন আলী, গাড়াখোলা খাঁ বাড়ি মসজিদের ইমাম ও অফিস সহকারী মোঃ হুমায়ুন কবির এবং শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসনকে সদস্য করা হয়। উল্লেখ থাকে যে, জিআর চালের ডিও প্রদানের সময় এতিমদের খাবারের জন্য নেয়া এ চাল অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না বলেই সরকারী দপ্তর থেকে নির্দেশনা ছিল। যদিও ওই কমিটি ফুলতলা খাদ্য গুদাম গেটেই ডিও বিক্রি করে দিয়েছিলেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসায় কোন লিল্লাহ বোডিং নেই। এছাড়া লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মাদ্রাসায় কর্মচারী নিয়োগ, ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন, জনৈক বাবলু মোল্যাকে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দিতে তার কাছ থেকে এক শিক্ষকের নামে জমি রেজিষ্ট্রি করিয়ে নেওয়া হয়, যদিও পরবর্তীতে সুযোগ সন্ধানী ওই শিক্ষক তার পরিবারের সদস্যদেরকে মাদ্রাসা কমিটির দাতা সদস্য করে সেই জমি মাদ্রাসার নামে দান দেখানো হয়েছে। পাশর্^বতীতে মক্তবখানার জমি মাদ্রাসার নামে অনৈতিকভাবে রেকর্ড করিয়ে নেয়। ভুয়া বিল ভাউচার করে ম্যানেজিং কমিটি বিপুল টাকা আত্মসাৎ করে। এছাড়া মাদ্রাসার শিক্ষক ফিরোজ মোড়লের নেতৃত্বে এতিমখানার নামে গ্রাম থেকে ধান, চাল, নগদ টাকা, ঈদুল ফিতরে যাকাত, ফেতরা এবং ঈদুল আজহার কোরবানির চামড়া কালেকশন করিয়ে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসনীম জাহান এর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এর পূর্বে ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে মাদ্রাসার সুপার শাহাজাহান হুসাইন এর অপসারন এবং দুর্ণীতি ও আত্মসাৎকারী ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওই গ্রামের বাহারুল গাজী, ইমরুল কায়েস নিতু, আব্বাস আলী মোল্যা, আবুল মোল্যা, সালাউদ্দিন শেখ, রেজাউল মহলদার, আলামিন সানা, ফয়সাল হোসেন, মেহেদী হাসান শিবলু, কে এস সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। অপরদিকে সুপার শাহাজাহান হুসাইন বলেন, নতুন ভবন নির্মানের জন্য এতিমখানা আপাতত বন্ধ রয়েছে। সরকারি ৭৫ মন চাল উত্তোলনের কথা স্বীকার করে বলেন, এ পর্যন্ত মোট চাল বিক্রির ৬০ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। তার মধ্যে কিছু টাকা দিয়ে সাইকেল গ্যারেজ নির্মানে ব্যয় করা হয়েছে। আরও কিছু টাকা কমিটির সেক্রটারী ফিরোজ মোড়লের কাছে রয়েছে। এ ছাড়া চুক্তি অনুযায়ী আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ আসলাম খান ও খলিল শেখ সরকারি দপ্তরে খরচ হিসেবে দেখিয়েছে। তবে মামলা থাকায় খলিল শেখ গা ঢাকা দেওয়ার কারণে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসনীম জাহান স্মারকলিপির কথা স্বীকার করে বলেন, দ্রুত বিষয়টি তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।